সামাদেরা যেভাবে হারিয়ে যায়-শিশির আজাদ চৌধুরী
1 min read
কিছুদিন আগেই বিবিসি’র এক নিউজে দেখলাম; জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটারদের এখন এমন যে দূরাবস্থা- তাদের ছেঁড়া জুতো পর্যন্ত বারবার ঘাম লাগিয়ে পড়তে হয় এবং সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটাররা হতাশ হয়ে জানায়, তাদের স্পন্সর নেয়ার মতো কী এমন কোনো কোম্পানি নেই- যাদের স্পন্সরে আর বারবার ছেঁড়া জুতো পড়ে মাঠে নামতে হবে না? এ পরিস্থিতির মূল কারণ জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের প্রতি সেদেশের সাধারণ জনগণের অনীহা এবং সাপোর্টিংএর অভাব।
তবে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের এর সাথে তুলনা না হলেও বাংলাদেশ ফুটবল দল (বাফুফে) এর চেয়ে কম নয়। বাংলাদেশ ফুটবল দল (বাফুফে) তেও কোনো কোম্পানির তেমন স্পনসর যায় বলে মনে হয় না। তারও মূল কারণ বাংলাদেশ ফুটবলের প্রতিও এদেশের সাধারণ জনগণের অনীহা এবং সাপোর্টিং অভাব। কারণ এদেশের ফুটবল প্রেমী কেবল দুই দেশ কেন্দ্রিক। এদেশের মানুষের কাছে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল নিজস্ব রাজনৈতিক দলের মতোই এবং ধর্মের চেয়েও কম নয় (আবেগ দেখে যা বুঝা যায়)। অথচ আর্জেন্টিনাও বাংলাদেশর ন্যায় গরীব রাষ্ট্র। যে দেশে খাদ্যের অভাবে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুটি আজকের লিওনেল মেসি। ব্রাজিলের একটি গ্রামে থাকা গাড়ি মেরামত কর্মীর ছেলেটি আজকের নেইমার। কারণ সে দেশের মানুষ তাদের ফুটবলকে লালন করে, ভালোবাসে। যার ফলে ফুটবলই ওই দুইদেশকে তুলে ধরেছে বিশ্বের কাছে। কিন্তু তারা বাংলাদেশকে চিনে কি-নাও সন্দেহ। তবে আমাদের তাদের মতো এমন কেউ ছিলো না তা নয়। আমাদের একজন ফুটবল যাদুকর সামাদ ছিলো। রংপুর তাজ ক্লাবের হয়ে তার খেলা শুরু হলেও, সর্বশেষ খেলেছিলেন ভারতীয় ফুটবল দলে (তখন ভারত পাকিস্তান বিভক্ত হয়নি) এবং যখন তিনি খেলেছিলেন তখন পেলে-ম্যারাডোনারাও মাঠে পা রাখেনি। আর তার এই ফুটবল যাদুকর উপাধিটাও পেয়েছিলেন লন্ডনের মাটিতে, যেদিন লন্ডনের মাঠে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে ছিলেন চার গোল না দিয়ে তিনি ফিরবেন না এবং গোলও দিয়েছিলেন চারটি। খেলাটি ছিলো চার আর এক গোলের। কিন্তু আজ আমরা সামাদদের হারিয়েছি দেশীয় ফুটবলের প্রতি সাধারণ জনগণের অনীহা ও অবহেলায়।
আজ ২০২১ সালে এসেও বাঙালিরা মা’ত’লা’মি করে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল নিয়ে। একে অপরের বিরুদ্ধে উ’ন্মা’দ’না ছড়ায় অনলাইনে অফলাইনে। আর তার অতলে থেকে যায় শতশত সামাদ, যারা কখনো আলোর মুখ দেখে না ফুটবলকে নিয়ে।