কবিতা: ভেজা চিঠির ঘ্রাণ-তাসনোভা খানম পাঠান
1 min read
একটু বৃষ্টিতেই সব কিছু ডুবে যায়, তোমার মহল্লার রাস্তাঘাট,বাড়িঘর সব কিছু, একেবারে সবকিছু।
তার সাথে ধুয়ে মুছে হারিয়ে যায়
তোমার বাড়ির রাস্তায় পড়ে থাকা
ছোট বড় আমার অপেক্ষার দীর্ঘ সময়।
আমি যখনই পা বাড়াই
তোমার বাড়ির দিকে..
তখনই তোমার মহল্লা জুড়ে চলে গোপন ষড়যন্ত্র
কালো মেঘ জমতে শরু করে
তোমার মহল্লার ছোট্ট আকাশে,
সেই সময় প্রতিবারই একটা কাক ঠিক আমার মাথার উপরে বিকট শব্দে কা-কা চিৎকার করে উঠে।
আচমকা এক অসভ্য রাগী বাতাস
ফুঁসতে থাকে মহল্লার দেওয়ালে দেওয়ালে,
রাস্তায় শুয়ে থাকা এক অলস কুকুর
বাতাসের ভয়ে আশ্রয় খোঁজে দৌড়ে
পালায় তোমার বাড়ির সিঁড়ির ঘরে।
একই ডানা ভাঙা লাল ঘুড়ি পথ হারিয়ে বারবার আছড়ে পড়ে
আমার মাথার উপর।
তারপর,
তারপরই শুরু হয় প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টি,
ঠিক সেই সময়ই তোমার জানলা দিয়ে
বাতাসে ভেসে আসে “ইকরার” করুণ আর্তনাত……
আমার বুকের বাক্সবন্দী কান্না
হঠাৎ করে বাক্স থেকে বের হয়ে
উড়তে গিয়ে আছড়ে পড়ে হৃদয়ের
আর্তনাদের সুরে সুরে,
সেই করুণ সুর আর কান্নার জল
বৃষ্টির সাথে মিশে ডুবিয়ে দেয় তোমার মহল্লা
আমিও ডুবতে থাকি সেই জলে,
আর শাড়ির আঁচলের জলে ভিজতে থাকে
তোমার লেখা- শেষ বিচ্ছেদের চিঠিটি।
তোমার বাড়ির দরজা পর্যন্ত আমার আর যাওয়া হয় না বহুকাল।
তোমার মহল্লা প্রতিবারই ডুবে যায়
আমার বুকের বাক্সবন্দী কান্নায়।
সেই জলে ডুবে মরি আমি বারবার,
সাথে মরে মহল্লার রাস্তায় রাস্তায় পড়ে থাকা
আমার সব অপেক্ষা,
একটি কাক,
একটি কুকুর
আর ডানা ভাঙা একটি লাল ঘুড়ি।
নয়শো তিপান্ন দিন যাবৎ তোমার মহল্লায়
বাতাসে বাতাসে ভেসে বেড়াই
বৃষ্টির জলে ভিজে যাওয়া
আমাদের বিচ্ছেদের চিঠির ঘ্রাণ।
(লেখক পরিচিতি)
তাসনোভা খানম পাঠান
অনার্সঃ ১ম বর্ষ, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।